বাংলাদেশে এখন অনেক মানুষ আছেন যারা বাসায় কুকুর পালছেন। একটি কুকুর সঠিক ভাবে পালতে হলে আপানাকে ওদের সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে। অনলাইনে আপনার প্রিয় কুকুরটির জন্য কত কিছুই না কিনছেন। ডগ ফুড, ট্রিট, খেলনা, জামাসহ কত কিছু। কিন্তু কখনো কি ওর দাঁত নিয়ে চিন্তা করেছেন। আপনার কুকুরের দাঁতের যত্ন কি নিচ্ছেন?
অনেকেরই অভিযোগ আছে, “আমার কুকুরের নিঃশ্বাসে বাজে গন্ধ”। আমরা মানুষরা যেমন প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করি ঠিক ওদেরও প্রতিদিন সম্ভব না হলেও ২/৩ দিন অন্তর অন্তর দাঁত ব্রাশ করা প্রয়োজন। ভ্রুটা একটু কুঁচকে মনে মনে নিশ্চিত বলছেন, “ডগ টুথপেস্টের যে দাম!!”। তাহলে আপনাকে খুশি করার মত কিছু তথ্য আছে আমার কাছে। ঘরে সব সময় থাকে এমন কিছু উপাদান দিয়ে খুব কম সময়ে আপনার কুকুরের জন্য টুথপেস্ট তৈরি করতে পারবেন। ২/৩ দিন পর পর যদি নিয়মিত ব্রাশ করান তাহলে দেখবেন ওর মুখে কোন দুর্গন্ধ নেই। এবং এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো কুকুরদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।

আমি টুথপেস্ট কিভাবে বানাতে হয় এবং প্রতিটি উপাদানে কি কি গুনাগুন আছে সব বলে দিচ্ছি। আমার নিজের একটি ছোট ব্রিডের কুকুর আছে। ও এই টুথপেস্ট সব সময় ব্যবহার করে ওর কোন সমস্যা হয়নি। আশা করি আপনাদের কুকুরটিরও কোন সমস্যা হবে না। আর একটি মজার বিষয় ইচ্ছে করলে আপনিও মাঝে মাঝে এটা ব্যবহার করতে পারেন। এমন ভাবে বানাবেন যেন আপনিও ব্যবহার করতে পারেন।
কুকুরের টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদান
– হলুদ- ৪/৫ টুকরা (মাঝারী)
– দারুচিনি- ৫/৬ টুকরা (মাঝারী)
– ধনেপাতা- আপনার হাতে এক মুঠ
– বেকিং সোডা- ১ টেবিল চামচ
– নারিকেল তেল- ২ টেবিল চামচ
– এলাচি- ৩/৪ টি
কুকুরের টুথপেস্ট তৈরির প্রণালী
– প্রথমে দারুচিনি, এলাচি এবং হলুদ ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর পানি ভালো করে ঝরিয়ে হালকা করে ভেঙ্গে নিন।
– এখন একটা তাওয়া অথবা কড়াইয়ে হালকা আঁচে সময় নিয়ে মচমচে করে ভাজুন। খেয়াল রাখবেন যেন পুড়ে না যায়।
– ভাজা হয়ে গেলে ব্লেন্ডারে একদম গুঁড়া করে ফেলুন। আপনার বাসায় ব্লেন্ডার না থাকলে কোন সমস্যা নেই মশলার পাটায় গুঁড়ো করে নিন।
– এখন ধনেপাতা দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। টুথপেস্ট বললেও এটা পেস্ট না হওয়াই ভালো তাহলে অনেক দিন টিকবে।
– এবার বেকিং সোডা আর নারিকেল তেল দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন।
– শুকনা কাঁচের শিশিতে সংরক্ষণ করুন। অনেকদিন ভালো থাকবে। সামান্য পানি মিশিয়ে আপনার কুকুরের দাঁত ব্রাশ করে দিবেন।
টুথপেস্টটি বানানো শিখে নেয়ার পর আসুন এবার দেখে নেই প্রতিটি উপাদানের গুণাগুণ গুলো।
কুকুরের জন্য হলুদ
হলুদ আপনার কুকুরকে নানা ধরণের রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। হলুদ কুকুরকে ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচায়। কুকুরের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ক্যান্সার ঠেকাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে এই হলুদ।
আমেরিকার কয়েকজন গবেষক বিভিন্ন ধরণের গবেষণা করে দেখেছেন হলুদ ক্যান্সার আক্রান্ত কুকুরকে ভালো করার জন্য ব্যবহার করা যায়।
হলুদ ক্যান্সারের কোষকে বাড়তে দেয় না। দাঁতের গোঁড়ায় নানা ধরণের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা হলুদ ধ্বংস করতে পারে।
কুকুরের জন্য দারুচিনি
শরীরের কোষ ভালো রাখতে সাহায্য করে দারুচিনি। হাড়ে প্রদাহ আর ক্যান্সার থেকেও বাঁচাবে এই দারুচিনি। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। হাড়ের গঠন ভালো রাখে।
তাছাড়া খাবারে সামান্য দারুচিনি মেশালে আপনার কুকুরের মুখে দুর্গন্ধ থাকবে না।
কুকুরের জন্য এলাচি
এলাচি অনেক সুগন্ধি একটি মশলা। কিন্তু অতিরিক্ত এলাচি ওদের জন্য ভালো না। সুতরাং অন্য কোন ভাবে ওদের খেতে দেবেন না। খুব অল্প এলাচি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
কুকুরের জন্য বেকিং সোডা
বেকিং সোডা কুকুরকে খাওয়ানো উচিৎ না। এই টুথপেস্টে থাকা সামান্য বেকিং সোডা কুকুরের জন্য ভালো। দাঁতের ময়লা আর খাদ্য কণা দূর করে দেবে এই বেকিং সোডা।
পেটের বদ হজম দূর করতে সাহায্য করবে।
কুকুরের জন্য নারিকেল তেল
ওদের খাবারে কোন ধরণের তেল ব্যবহার করা যায় না সেটা তো ভালো করেই জানেন। কিন্তু মাঝে মাঝে খুব সামান্য হলেও ওদের তেল দেয়া উচিৎ। তাহলে ওদের চামড়া আর লোম ভালো থাকবে।
কুকুরের জন্য ধনেপাতা
ধনেপাতা দৃষ্টিশক্তি এবং হজমশক্তি উভয়ের জন্য খুব ভালো কাজ করে। এতে আয়রন আছে যা রক্ত তৈরি হতে সাহায্য করে। ব্লাড সার্কুলেশনও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ক্যালসিয়াম আছে এতে যা হাড়ের ঘনত্ব ও জয়েন্ট ভালো রাখে।
মনে রাখবেন-
– এই উপাদান গুলো দিয়ে আপানার কুকুরের জন্য খাবারও বানাতে পারেন।
– কুকুরকে শুধু ডগ ফুড খাওয়াবেন না। ডগ ফুডের পাশাপাশি বাসায় বানানো খাবার দেবেন তাহলে ওর রুচি নষ্ট হবে না।
– এই টুথপেস্ট ১ টেবিল চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ ব্যবহার করবেন।
আপনার প্রিয় প্রাণীটির এমন সব উপকারি তথ্য পেতে হলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
Source
canigivemydog.com
dogsnaturallymagazine.com
animalwised.com
sitstay.com