শরীরে আয়রনের অভাব হচ্ছে, কি করে বুঝবেন?

আমাদের দেহের অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে আয়রন। হিমোগ্লোবিন তৈরিতে খুব দরকারি একটি উপাদান হচ্ছে আয়রন। হিমোগ্লোবিন সারা দেহে অক্সিজেন সরবরাহ করে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন আয়রন কতোটা দরকারি আমাদের জন্য। সাধারণত নারীদের এই সমস্যা দেখা যায়।

অবসন্ন বোধ করা

প্রতিদিনের কাজের চাপে ক্লান্তিভাব আসতে পারে। কিন্তু আয়রনের অভাব হলে অল্প কাজ করেই ক্লান্তিভাব আসতে পারে, বিসন্ন লাগে, দুর্বল লাগে, কাজে মন বসে না। আয়রনের অভাবে রক্তে অক্সিজেন ঠিক মতো পৌঁছায় না বলে এমনটা হতে পারে।

বিবর্ণ চেহারা

আয়রনের অভাবে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন উৎপন্ন করতে পারে না বলে রক্তের ঘাটতি পড়ে। রক্তের লালচে ভাব চলে যায়। টর্চ দিয়ে নাক, কান, জিহ্বা দেখলে ফ্যাকাসে দেখাবে।

নিশ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা

সিঁড়ি বেয়ে উঠা নামা করলে অথবা জোরে হাঁটাহাঁটি করলে শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। অনেক গভীরে শ্বাস নিলেও মনে হবে না পর্যাপ্ত। খুব জলদি ক্লান্তি চলে আসবে।

আয়রন না থাকলে পায়ে ভারসম্যহীনতা হয়

আয়রনের অভাবে পায়ে কাঁপা কাঁপি হয়। হাঁটতে চলতে ভারসম্য থাকে না।

শরীরে আয়রনের পরিমাণ যত কমবে ভারসম্য রাখতে তত কষ্ট হবে।

আয়রন কম হলে গর্ভবতী নারীরা বমি করেন

মায়ের গর্ভে যে শিশু লালিত হচ্ছে তার আয়রন দরকার। সে তার প্রয়োজনীয় সব কিছুই মায়ের কাছ থেকে গ্রহণ করে থাকে।

সুতরাং যখন মা শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণের আয়রন না থাকে তখন মা বমি করেন।

জিহ্বার রঙ অদ্ভুত হয়ে যায়

শরীরে আয়রন কম থাকলে জিহ্বার রঙ অদ্ভুত হতে শুরু করে। আয়রন মায়োগ্লোবিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই রক্তকণিকা জিহ্বার পেশী গঠনে কাজ করে।

তাই এর অনুপস্থিতি আপনার জিহ্বার উপর নিয়ন্ত্রণকে ব্যহত করতে পারে।

চুল পড়া

আয়রনের অভাবে রক্ত স্বল্পতা দেখা যায় আর তাই চুল পরতে থাকে। এমন সময় দৈনিক ১০০ টি চুল পরতে পারে।

থাইরয়েডের সমস্যা

আয়রন শরীরে কম থাকলে থাইরয়েড গ্রন্থি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়। শরীরে নানান বিপাকীয় সমস্যা দেখা দেয়।

বরফ অথবা অদ্ভুত জিনিস খেতে ইচ্ছে করে

খুব অদ্ভুত একটি সমস্যা হয় খাবারের ক্ষেত্রে। সাধারণত নারীদের এই সমস্যা দেখা যায় বেশি।

আয়রনের অভাবে বরফ খেতে ইচ্ছে করে। অনেক ক্ষেত্রে চক বা কাদা খেতে ইচ্ছে করে।

হৃদযন্ত্র ধড়ফড় করা

আগেই বলেছি আয়রনের অভাবে রক্তের সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রে সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

এ ধরণের সমস্যায় হৃদ স্পন্দন বেড়ে যায়, হৃদ স্পন্দন মিস হয়। এমন ভাবে চলতে থাকলে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে।

সবাই সঠিক পরিমাণে আয়রন গ্রহণ করুন। আয়রনের অভাব শুনতে অনেক স্বাভাবিক হলেও শরীরে অনেক অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। হতে পারে গুরুতর ক্ষতিও।

1 thought on “শরীরে আয়রনের অভাব হচ্ছে, কি করে বুঝবেন?”

  1. অনেক অনেক ধন্যবাদ, একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর সুন্দর একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য।।

    Reply

Leave a Comment