দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাচ্ছে আরেকটি বছর। আমাদের দেশে বছরের শেষে শুরু হয় শীতকাল। শরীরকে সুস্থ রাখতে আমাদের নিয়মিত মৌসুমি ফল খাওয়া উচিৎ। এই শীতে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নানান ধরণের ফল। জেনে নিন শীতকালীন কোন ফলে কি পুষ্টি গুণ আছে।
বড়ই
বড়ই হচ্ছে শীতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল। নানা ধরণের বড়ই পাওয়া যায়। এদের মধ্যে বাউকুল, কাসবড়ই, দেশি টকমিষ্টি বড়ই, আপেল কুল খুব জনপ্রিয়।
ফোঁড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, রক্ত আমাশয়, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা সমাধান করতে পারে।
শীতকালীন ফল জলপাই
শীতকালীন ফল জলপাই ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ। উচ্চরক্তচাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য, কোলন ও পাকস্থলির ক্যানসার দূর করতে জলপাই এর ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর জলপাইয়ে আরো রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘ই’। এই ফলটি খুব স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায়।
আপনি ইচ্ছে করলে মিষ্টি অথবা ঝাল আচার বানিয়ে সারা বছরের জন্য সংরক্ষণ করতে পারেন। এছাড়া ডিপ ফ্রিজে বরফ করে সংরক্ষণ করতে পারেন পরবর্তীতে খাওয়ার জন্য।
আমলকী
হাইব্রিড আমলকীর ফলনের কারণে এখন আমরা সারা বছরই খেতে পারি এই ফলটি। মূলত আমলকী একটি শীতকালীন ফল। ভিটামিন ‘সি’-এর রাজা বলা হয় একে। ত্বক ও চুল সুরক্ষা, মাড়ি মজবুত করতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে বড় ধরণের ভূমিকা পালন করে আমলকী। শীতকালে সবারই চুল পরা, চুলে খুশকি, চুল রুক্ষ এইসব নিয়ে নানান সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় বেশি বেশি করে আমলকী খেলে এই ধরণের সমস্যাগুলো থেকে খুব জলদি মুক্তি পাওয়া যায়।
সফেদা
সম্প্রতি নামকরা আর একটি ফল হচ্ছে সফেদা। শীতকালীন এই ফল আমাদের দেশে একসময় তেমন একটা পরিচিত ছিল না কিন্তু এখন এই ফলটি প্রিয় ফলের তালিকায় চলে এসেছে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুনের কারণে। সফেদা ক্যান্সার প্রতিরোধক, কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণ, কিডনি সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য, কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। সফেদায় রয়েছে- ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘বি কমপ্লেক্স’, পটাশিয়াম, কপার, আয়রন, ফাইবার। মিষ্টি এই ফল বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
কৎবেল
ব্রণ ও মেছতায় কাঁচা কৎবেলের রস মুখে মাখলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। কৎবেল পাতার নির্যাস শ্বাসযন্ত্রের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কৎবেলের পাতা দুধ এবং চিনি দিয়ে মিশিয়ে খাওয়ালে শিশুদের পেটের ব্যথার উপশম করে। এই ফল দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠবদ্ধতা ও আমাশা দূর করে। রক্ত পরিষ্কার, শক্তি বৃদ্ধি এবং রক্ত স্বল্পতা দূর করে।
কৎবেল মহিলাদের হরমোনের অভাব সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে থাকে। এমনকি স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার নিরাময় করে থাকে।
ডালিম
আপনি যদি উচ্চ রক্ত চাপে ভোগেন তাহলে ২ সপ্তাহ ডালিম খেয়ে দেখুন, আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হাড়ের সংযোগ স্থলের ব্যথা উপশম করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং রক্ত পরিষ্কার করে। রক্তে কলেস্টরলের মাত্রা ঠিক রাখে যার দরুন হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ডালিম স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
শীতকালীন ফল কমলা
শীতের কথা মনে করলেই অনেকের মাথায় প্রথমে যে ফলটি আসে তা হল কমলা। কমলা ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘বি কমপ্লেক্স’, ফাইবার ও মিনারেলে সমৃদ্ধ। কমলায় থাকা ভিটামিন সি যেমন আমাদের দাঁতের জন্য ভালো ঠিক তেমনি ত্বকের জন্য খুব দরকারি। আমরা অনেক টাকা খরচ করে বাজার থেকে কমলা সমৃদ্ধ কসমেটিক্স কিনি কিন্তু সেই টাকা দিয়ে কমলা কিনে খেলে কতটুকু উপকার পাব সেটা ভেবে দেখি না।
কমলার রস ত্বকে প্রয়োগ করলে ত্বক উজ্জলতা ফিরে পায় এবং ত্বকের লাবণ্য ঠিক থাকে। হৃদরোগীদের জন কমলা অনেক উপকারী।
Source
healthline.com
nutrition-and-you.com
medicalnewstoday.com
glassdoor.co.in