সঙ্গীত শুধু মনের খোরাক নয়, কেন? জেনে নিন।

যদি আপনি গান শুনতে ভালোবাসেন তাহলে আপনি মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভালো আছেন। চার্লস ডারউইন বলেছিলেন, “যদি আমি আবার জীবিত থাকি, তবে আমি কিছু কবিতা পড়তে এবং কমপক্ষে একবার প্রতি সপ্তাহে কিছু সঙ্গীত শুনতে চাইতাম”। অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ঘোষণা করেছিলেন, “যদি আমি একজন পদার্থবিদ না হতাম, আমি সম্ভবত একটি সুরকার হতাম”। জিমি হেন্ডরিক্স বলেছেন সঙ্গীত তার ধর্ম। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, সংগীত শোনার ফলে আপনার মানসিক অবস্থার উন্নতি সাধন হয়। এছাড়া শারীরিক স্বাস্থ্যেরও বিস্ময়কর পরিবর্তন দেখা যায়। আপনি যদি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখেন তাহলে আপনার আইকিউ বাড়বে। আরও কিছু উপকার করে সঙ্গীত।

সংগীত আপনাকে খুশী রাখে

সঙ্গীত
গান শুনলে মন প্রফুল্ল থাকে

একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপনি যখন গান শুনবেন আপনার মস্তিষ্কটি ডোপামাইন নির্গত করে যা সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করে। আপনার মানসিক বিকাশে যা অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। সুতরাং দৈনিক ১৫ মিনিট গান শোনার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করুন।

সংগীত আপনার কাজের দক্ষতা বাড়িয়ে দেয়

সঙ্গীত
মানসিক দক্ষতা বাড়ায়

কেউ যদি আমার সংগীত থেকে কিছু নেয় তা অবশ্যই প্রেরণা হবে। সেটা হল কাজ করে যাওয়া যতক্ষণ সম্ভব এবং পেছনে ফিরে তাকানো যাবে না” –এমিনেম।নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে গান শুনুন। আপনার কাজকে গতিময় করতে গানের বিকল্প আর কিছু নেই। কিছু দৌড়বিদের উপর গবেষণা করে দেখা গেছে যারা নিজের পছন্দের গান শুনে দৌড়েছেন তারা নিজেদের আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন।

মানসিক চাপ কমায় এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করে

সংগীত শোনার ফলে আপনার মানসিক ধকল কমে যায়। শরীরের স্ট্রেস হরমোন কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। মানসিক চাপ আমাদের ৬০% রোগের জন্য দায়ী। এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যারা সক্রিয় ভাবে গান শোনেন তাদের ইমিউন সিস্টেম আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়ে যায়। শান্ত ও সুস্থ থাকার জন্য আপনার কক্ষে গান ছেড়ে দিন এবং আরও ভালো ফলাফল পেতে তালে তাল মিলিয়ে একটু পা দোলানোর চেষ্টা করুন।

অনিদ্রা দূর করে

৩০% এরও বেশী আমেরিকান অনিদ্রায় ভোগেন। যেই শিক্ষার্থীরা ঘুমানোর আগে গান শোনেন তারা অনেক বেশী সক্রিয় হন যারা তেমন কিছুই করেন না তাদের থেকে। সংগীত অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে পারে। যদি আপনার ঘুমাতে সমস্যা হয় আপনি ঘুমানোর আগে গান শুনুন, ভালো ফলাফল পাবেন অবশ্যই।

কম খেতে সাহায্য করে

জর্জিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাটি দেখিয়েছে যে, আলো এবং সঙ্গীতকে নরম করে তোলার সময় লোকেরা কম ক্যালোরি খায়। আপনি যদি আপনার খাদ্যগ্রহণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চান তাহলে খাবারের সময় গান শুনুন।

সংগীত আপনার ব্যথা দূর করে হোক সেটা শারীরিক অথবা মানসিক

বব মারলে-এর একটা কথা আছে-

“সংগীতের একটি ভালো দিক হল, যখন এটি আঘাত করবে আপনি কোন ব্যথা পাবেন না।” ফিলাডেলফিয়ার ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যান্সারের রোগীদের মধ্যে প্রাক-রেকর্ডিং সঙ্গীত মানসিক চাপের চেয়েও ব্যথা কমিয়ে দেয়। অন্য গবেষণা দেখিয়েছে যে, গান নিবিড় পরিচর্যা রোগীদের এবং জেরিয়াটিক কেয়ার রোগীদের মধ্যে ব্যথা হ্রাস করতে পারে। কিন্তু নির্বাচিতো ক্লাসিক গান প্রয়োজন। ধ্যানমগ্ন সঙ্গীত বা রোগীর পছন্দের সংগীত।

বব মার্লি এই বিষয়ে সঠিক ছিলেন, “আপনার ব্যথা দূর করার জন্য আপনার ভালো লেগেছে এমন গান শুনুন”।

স্ট্রোক করেছেন এমন রোগীদের জন্য গান

সঙ্গীত
স্ট্রোক এড়াতে গান শুনুন

হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, স্ট্রোক রোগীদের যারা দিনে দুই ঘন্টা নিজেদেরকে বেছে নিয়েছে সঙ্গীত শোনার জন্য, তারা মস্তিষ্কের উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছে। গান শোনার কারণে তাদের শ্রবণ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। স্ট্রোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 5 নম্বর মৃত্যুর কারণ। আপনি যদি স্ট্রোক ভোগ করেন এমন কেউকে জানেন তাহলে অতিশীঘ্র তাকে তার পছন্দের গান গুলো শুনতে বলুন। আশানুরূপ ফোল পাবে। কেউ যদি গান ভালোবাসে তাহলে সে অপরাধ থেকে দূরে থাকে। বেনিংটন এর গানের লাইন দিয়ে শেষ করছি-

“In this farewell

There’s no blood

There’s no alibi

‘Cause I’ve drawn regret

From the truth

Of a thousand lies”

 

 

 

 

 

 

Leave a Comment