আমরা নিজেকে অন্যদের সামনে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য কত কিছু করি। কে না চায় নিজেকে অন্য জনের সামনে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে?
আমরা অনেকেই ওজন কমানোর জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে আছি। কিন্তু কখনো লক্ষ্য করেছি কি এই পৃথিবীতে এমনও মানুষ আছে যারা ওজন বাড়ানোর জন্য কত কিছুই না করে যাচ্ছে। কিন্তু কোন ভাবেই সফল হচ্ছে না। আর এর পেছনে মূল কারণ হলো আমাদের সঠিক নিয়ম মেনে না চলা। ওজন বাড়ানোর জন্য বেশী কিছু নয় শুধু সঠিক নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া দরকার যেন খাবারটি আমাদের শরীরে লাগে। আজ আপনাদের সামনে কিছু সঠিক নিয়ম বা সঠিক উপায় তুলে ধরলাম। আশা করি তা মেনে চললে আপনি খুব কম সময়ে নিজের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
তাহলে আর দেরী কেনো চলুন জেনে নেওয়া যাক উপায় গুলো।
ওজন বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শুরু করুন
আমরা অনেক সময় স্বাস্থ্য বাড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ খাবার খেয়ে থাকি কিন্তু তারপরও আমাদের স্বাস্থ্য বাড়ে না। এর কারণ হলো আমরা নিয়ম মেনে খাবারটি খাচ্ছি না শুধু পেট ভরছি। তাই উপযুক্ত খাবার খেতে হবে। আমাদের শরীরে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রোটিন, কার্বন ও ফ্যাট এর প্রয়োজন হয় এগুলোর ঘাটতি পড়লে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে। এর জন্য প্রতিদিন বাদাম আর দুগ্ধজাত খাবার খান। দেহের পেশী গঠনে প্রোটিন যুক্ত খাবার দরকার। এটি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ মাংস, ডিম, পনির ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভাত, রুটি-আলু গ্রহণ করুন। ওজন বাড়ানোর জন্য বসা ভাতের উপকারিতা অনেক বেশী। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালোরি। মাছ, মুরগি এ গুলো প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখুন। টুনা মাছও খেতে পারেন।
তরল জাতীয় খাবার বেশী খান
কিছুক্ষণ পর পর তরল জাতীয় খাবার খান যা আপনার ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে এটা মনে রাখা আমাদের খুব জরুরী ভারি খাবার খাওয়ার আগে বা খাবারের মাঝখানে পানি খাওয়া ভালো নয়। কারণ খাবারে মাঝখানে বেশী পানি খেলে আপনার ক্ষুধা নিবারণ হয়ে যাবে তখন ভারি খাবার খাওয়ার ইচ্ছে নষ্ট হয়ে যাবে। তাছাড়া খাওয়ার মাঝে বেশী পানি খেলে খাবার হজমে সমস্যা হয়।
ওজন বাড়াতে ঘন ঘন খাবার খান
আপনি যদি দেহের ওজন বাড়াতে আগ্রহি হয়ে থাকেন তাহলে প্রতিদিন ২-৩ ঘন্টা অন্তর অন্তর ৫ থেকে ৭ বার পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করুন।
আমরা সাধারণত দিনে ৩ বার খাবার খেয়ে থাকি। আপনি দিনে ৬ বার খাবার গ্রহণ করেন তবে পরিমাণটি যাতে নির্দিষ্ট হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন।
কলা, আম ইত্যাদি ফল বেশী পরিমাণ খেতে হবে। এতে করে আপনার খেতে কোন সমস্যা হবে না। ভাজা খাবার পরিহার করুন। ক্যালোরি যুক্ত খাবারগুলো বেঁছে বেঁছে প্রচুর পরিমাণে খান।
তাজা ও শুকনো ফল এবং বাদাম খান
দুধের সাথে খেজুর, বাদাম, আম ইত্যাদি খেলে আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে পারে।
এছাড়া এই ফল গুলো দুধ ছাড়া খেতে পারেন।
খাবারের তালিকায় নিয়মিত কিশমিশ ও শুঁকনো ফল দেওয়া গাজরের হালুয়া, ক্ষীর, সেমাই রাখুন।
ফলের জুস
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশী ক্যালোরি যুক্ত ফলের জুস (যেমন আম, আঙ্গুর) রাখুন।
এসব ফলের জুস আপনার শরীরের ওজন বাড়াবে এবং স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি প্রদান করবে।
নিরমিত কলা ও দুধ খাবেন
কলা ওজন বাড়ানোর জন্য খুব উপকারী একটা ফল তাই প্রতিদিন ৬-৭ টি কলা দুধের সাথে সকালের নাস্তায় খেতে পারেন।
তাছাড়া প্রতিবার খাবার গ্রহণের পর একটি কলা খেতে পারনে যা আপনার হজম ক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করবে।
বেশী পরিমাণ পানি পান করুন
শরীরকে পরিবর্তন করতে চাইলে শরীরকে আর্দ্র রাখা খুব প্রয়োজন।
তাই প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন।
প্রতদিন ২-৩ লিটার পানি পান করুন।
পর্যাপ্ত ঘুমান
ঘুম দেহ গঠনের জন্য আবশ্যক তাই প্রতিদিন কম পক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান। রাতে কখনো দেরী করে ঘুমাবেন না। আবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যান। আপনি যতই খাবার খেয়ে থাকেন তা উপকারে আসবে না। কারণ ঘুমের সময় দেহ কোষ গঠনের কাজ চলে আর ভালো ঘুম না হলে পরিপাক ক্রিয়ায় সমস্যা দেখা যায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
আপনি হয়তো ভাবছেন রোগা পাতলা মানুষের কিসের ব্যায়াম? তাহলে এটা জেনে রাখুন আপনি ভুলের সাগরে বাস করছেন, কিছু বিশেষ ব্যায়ামে আপনার পেশী তৈরি ও ওজন বাড়িয়ে দিবে। ব্যায়াম ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরকে ফিট রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন। হাঁটতে পারেন বা ওজন বাড়ানোর ব্যায়াম গুলো করতে পারেন। এছাড়া আউটডোর খেলায় অংশ গ্রহণ করতে পারেন। শরীরের ওজন বাড়াতে খাবারের তালিকায় উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার রাখতে হবে। তবে এটা মনে রাখেন এই ধরনের বাড়তি ক্যালরি গুলো অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে নিতে হবে। যেসব খাবার প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যুক্ত সে সব খাবার গুলো খাবেন। এসব খাবার আপনার শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করবে ও ওজন বাড়াবে। এর সাথে দৈহিক ব্যায়াম আপনার দেহের সুস্থ্যতা নিশ্চিত করবে।
আমাদের সমস্যা হল আমরা ২/৩ দিন ঠিক মত চলার পর আবার আগের রুটিন মত চলতে থাকি।
ফলাফল আমরা আমাদের শরীরের কোন পরিবর্তন দেখতে পাই না।
একটা জিনিস সবসময় মনে রাখতে হবে কষ্ট না করলে ভালো কোন ফলাফল পাওয়া যায় না। সুতরাং নিয়ম মেনে চলুন।
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের উপকার হবে।
ওজন কমানোর কথাই সবাই ভাবে,এবং সেটা নিয়ে ব্যাপক লেখালেখিও হয়। কিন্ত যাদের ওজন অনেক কম, রুগা পাতলা, তাদের নিয়ে খুব কম মানুষই ভাবে। ওজন বাড়ানো নিয়ে লেখাও খুব একটা চোখে পড়েনা। আমি সিউর সাজেসনগুলি ঠিকমত মেনে চললে, রুগা-পাতলা মানুষগুলি সুসাস্থের অধিকারি হয়ে উঠবেন। পাতলা মানুষদের পক্ষ থেকে লেখককে অনেক ধন্যবাদ।।