শিশু যেন বুঝতে পারে, মন্দ আদর কি?

প্রায় সময়ই এখন মিডিয়াতে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনার খবর আসছে। হাইস্কুল হোক অথবা নার্সারি, কিংবা কিন্ডারগার্টেন শিশুরা বোধহয় যেন কোথাও আর সুরক্ষিত নয়।

এমনকি মাদ্রাসাতেও শিশু নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছে।

শিশু নিজেদের বাড়িতেও সুরক্ষিত নয়। যুগের তালে তাল মেলাতে গিয়ে বড়দের নানা কাজে অনেক সময় দিতে হয়। না চাইলেও দূরে থাকতে হয় বাচ্চাদের থেকে।

বাচ্চাদের দিকে বেশি নজর অনেকেই রাখতে পারেন না সময়ের অভাবে। এই সময় টার সুযোগ নেয় কতিপয় মানুষরূপী পশু। তখন বাচ্চা মানসিকভাবে অনেকটা দূরে চলে যায়।

ফলে অনেক সময় হেনস্থা বা যৌন হেনস্থার শিকার হলেও তারা বাড়িতে বলতে চায় না। এমতাবস্থায় কীভাবে বুঝবেন আপনার বাচ্চা হেনস্থার শিকার।

আজকে রয়েছে সেই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা।

অস্বাভাবিক আচরণ

শিশুরা খেলনা নিয়ে খেলতে ভালোবাসে। এটাই স্বাভাবিক। দিনের অনেকটা সময়ই নিজের প্রিয় বার্বি ডল বা অন্য পুতুল নিয়ে খেলে।

যদি দেখেন আপনার বাচ্চা পুতুল নিয়ে খেলার নাম করে বসে রয়েছে অথবা কোনও বস্তু নিয়ে অন্যান্য দিনের চেয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করছে তাহলে সাবধান হোন।

দুঃস্বপ্নের শিকার হওয়া

শিশুরাও ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখে। বড়রা যেমন ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে রিঅ্যাক্ট করে, শিশুদের ক্ষেত্রেও সেটাই স্বাভাবিক। তবে ছোটদের সাধারণত ঘুমের সমস্যা হয় না।

যদি দেখেন আপনার বাচ্চার ঘুম ঠিক হচ্ছে না তাহলে কারণ জানার চেষ্টা করুন। আর যদি দুঃস্বপ্নের শিকার হয় শিশু তাহলে নিশ্চয়ই কোনও গোলমাল রয়েছে।

এই গোলমালের সন্ধান আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে।

অন্যমনস্ক থাকা

সবসময় অন্যমনস্ক থাকা আর একটি বিষয়। অথবা সব জিনিসই আপনার বাচ্চা লুকোতে চাইছে কিনা সেটাও খেয়াল রাখুন।

কোনও ঘটনা মনে গভীর দাগ ফেললেই সাধারণত বাচ্চাদের এমন আচরণ করতে দেখা যেতে পারে। শুধু বাবা-মা নয়, সকলের থেকেই লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে শিশুরা। এমন অবস্থায় বাচ্চারা নিজেদের সবার থেকেও লুকিয়ে রাখে।

মুড সুইং করা

শিশুরা ছোট বয়সে একটা সময় পর্যন্ত বিছানা ভিজিয়ে ফেলে। এটা সবার ক্ষেত্রেই হতে পারে।

যদি দেখেন হঠাৎ করে নতুনভাবে তা শুরু হয় তাহলে অবশ্যই ভাবতে হবে।

কোনও লুকোনো ভয় কাজ করছে না তো শিশু মনে?

বাচ্চার মুড কি খুব তাড়াতাড়ি বদলে যাচ্ছে? নজরে রাখুন আপনার কোমল মতি শিশুর দিকে।

কাউকে অনেক ভয় পাওয়া

কোনও একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে কি আপনার বাচ্চা আতঙ্কিত? আপনি আচমকা কারও নাম বললে কি বাচ্চা ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে?

হতে পারে তিনি আপনাদের পরিচিত। আপনার কোন আত্মীয়, বাসার কাজের লোক, অফিসের কলিগ, বয়স্ক নানা।

এক কথায় নিয়মিত যাদের যাতায়াত রয়েছে বাড়িতে।

অথবা স্কুল বা পাড়া-প্রতিবেশী। এমন হলে অবশ্যই বাচ্চার কাছে বসে ধৈর্য্য ধরে জানার চেষ্টা করুন।

বাচ্চার কথা অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। যদি আপনি তাকে অবিশ্বাস করেন তবে সে আর আপনার কাছে কিছু বলবে না।

গোপনাঙ্গে ক্ষত

বাচ্চার মুখে বা ঠোঁটে অথবা গোপনাঙ্গে কোনও ক্ষত রয়েছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

উপরের কারণগুলো খেয়াল করলে এই বিষয়টিকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।

আপনার বাচ্চা নিজেই নিজেকে আঘাত দিচ্ছে কিনা সেটাও খেয়াল রাখুন অনেক সময় মানসিক আঘাত পেলে এমনটা করতে পারে।

পৃথিবীতে শিশু যেন অভয়ে থাকতে পারে তা আমাদেরই কর্তব্য। নিজের সন্তানকে সাবধানে রাখুন।

তাকে ছোট বেলা থেকেই শিখিয়ে দিন কোনটা মন্দ আদর।

কোন কোন জায়গাতে অন্য কেউ স্পর্শ করা ঠিক না। শিশুদের বড়দের বিভিন্ন জিনিসগুলোকে ছোটদের বোঝার মতো করে বোঝানোর চেষ্টা করুন।

 

 

2 thoughts on “শিশু যেন বুঝতে পারে, মন্দ আদর কি?”

Leave a Comment